
Perfect Dinner Diet: রাতে ঘুমের আগে কী খাচ্ছেন, তা আপনার ঘুমের গুণমানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। ভুল খাবার খেলে হজমে সমস্যা, গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা অস্বস্তি হতে পারে, যা গভীর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে বারবার ঘুম ভেঙে যায়, সকালে অবসাদ অনুভূত হয় এবং কর্মক্ষমতা কমে যায়। শরীর ও মনের পর্যাপ্ত বিশ্রামের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। কিছু খাবার রাতে খেলে আরামদায়ক ঘুম হয়, আবার কিছু খাবার ঘুম নষ্ট করতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য রাতের খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার, যাতে ঘুম গভীর ও নিরবিচ্ছিন্ন হয়।
যে খাবারগুলি এড়িয়ে চলবেন:
১. ময়দা, অয়েলি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
রাতে বেশি ময়দাযুক্ত, ভাজাপোড়া বা চর্বিসমৃদ্ধ খাবার খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে পেটে গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হতে পারে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই চিজবার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার ও ভাজা মুরগি খাওয়া এড়ানো উচিত, যাতে শরীর হালকা থাকে এবং ঘুম ভালো হয়।
২. বেশি জলীয় উপাদানযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকুন
পর্যাপ্ত পানি পান করা সুস্থ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস, তবে রাতের খাবারের সময় অতিরিক্ত জলীয় উপাদানযুক্ত খাবার খেলে তা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বেশি পরিমাণে স্যুপ, ফলের রস বা পানিযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে বারবার প্রস্রাবের চাপ তৈরি হয়, যার কারণে ঘুম বারবার ভেঙে যায় এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নষ্ট হয়।

ঘুমের গুণমান বজায় রাখতে রাতের খাবারে অতিরিক্ত তরল এড়ানো উচিত। বিশেষ করে, ঘুমের কিছুক্ষণ আগে বেশি পানি বা স্যুপজাতীয় খাবার খেলে শরীরের স্বাভাবিক বিশ্রাম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে। তাই গভীর ও নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করতে পানির পরিমাণ ভারসাম্যপূর্ণ রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন: নারী স্বাস্থ্য টিপস
৩. টক ফল ও কাঁচা পেঁয়াজ এড়িয়ে চলুন
রাতে কমলা, আনারস বা টক দই জাতীয় খাট্টা খাবার খেলে অ্যাসিডিটির মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা পেটে জ্বালা সৃষ্টি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। একইভাবে, কাঁচা পেঁয়াজ হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং অতিরিক্ত গ্যাসের উৎপত্তি ঘটাতে পারে, যা আরামদায়ক ঘুমে বাধা দেয়। রাতের খাবারে এমন উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা হজমে সহায়ক এবং অ্যাসিডিটি বা গ্যাস তৈরি করে না। হালকা, সহজপাচ্য এবং কম মশলাযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে পেট স্বস্তিতে থাকে, ফলে ঘুম গভীর ও শান্তিময় হয়।
৪. বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার কম খান
ফাইবার হজমের জন্য উপকারী হলেও রাতে বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে হজমের গতি ধীর হয়ে যেতে পারে, যার ফলে পেটে ভারী ভাব অনুভূত হয়। এটি অতিরিক্ত গ্যাস উৎপন্ন করতে পারে, যা পেট ফাঁপা, অস্বস্তি এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর সম্ভাবনা বাড়ায়।
রাতের খাবারে অতিরিক্ত শাকসবজি, বিচি-জাতীয় খাবার বা উচ্চ ফাইবারযুক্ত শস্যজাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলা ভালো, যাতে হজম স্বাভাবিক থাকে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়। হালকা ও সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করলে শরীর আরামদায়ক অবস্থায় থাকে এবং গভীর ও শান্তিপূর্ণ ঘুম নিশ্চিত হয়।
ডিনারের জন্য আদর্শ খাবার কী হওয়া উচিত?
রাতে হালকা, সহজপাচ্য ও কম মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তার সঙ্গে শাকসবজি, ডাল ও প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে পরিপাক তন্ত্র ভালোভাবে কাজ করবে।
রাতের খাবার বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নির্বাচন করলে শুধু পেটের সমস্যাই এড়ানো যাবে না, বরং ভালো ঘুমও নিশ্চিত করা যাবে। তাই ভারী, অয়েলি বা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবারের পরিবর্তে হালকা, সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার বেছে নিন, যাতে আপনার রাতটি আরামদায়ক হয় এবং পরের দিনটি শক্তিতে ভরপুর হয়।